শ্রমবাজার খুলে যাওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যেতে একজন শ্রমিকের ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বেশি খরচ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
রোববার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশা প্রকাশের পাশাপাশি মালয়েশিয়া যেতে নিবন্ধিত শ্রমিকরাও সৌদি আরব যেতে পারবেন বলে জানান মন্ত্রী।
সম্প্রতি সৌদি আরব সফরের বিষয়ে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, "সৌদি সরকার শিগগিরই বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য তাদের শ্রমবাজার উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে।"
সৌদি আরবের বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজের মৃত্যুতে সেখানে শোক চলছে, এজন্য কর্মী প্রেরণে কিছুদিন বিলম্ব হতে পারে বলেও জানান তিনি।
"আগামীতে সৌদি আরব যেতে ম্যাক্সিমাম ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়। আর এই খরচ দেশে হবে যাতায়াত, পাসপোর্ট তৈরি ও অন্যান্য বিষয়ে। রিক্রুটিং এজেন্সির ফি-ও দিতে হতে পারে।"
শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন,"কর্মী পাঠানো শুরু করার বিষয়ে সৌদি আরবের টেকনিক্যাল এক্সপার্টসহ একটি প্রতিনিধিদল শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে, সেখানে চূড়ান্তভাবে সবকিছু ঠিক করা হবে।
"বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং কর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে উভয় পক্ষের প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি যৌথ পরামর্শক কমিটি গঠনের বিষয়ে একমত হয়েছি। কমিটি বিভিন্ন সময় সভায় মিলিত হয়ে এ বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করবে।"
সৌদি আরবে লোক পাঠানো শুরু হলে অন্যান্য দেশেও অভিবাসন ব্যয় কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, "কাজ নিয়ে সৌদি আরবে যাওয়ার আগে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।"
দক্ষ শ্রমিকরাই সৌদি আরব যেতে সুযোগ পাবেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, "সব সেক্টরেই তারা লোক নিবে। ইন্টারভিউ নিয়ে শ্রমিক নেয়া হবে, যদি তারা ৫০০ শ্রমিক চায় তাহলে আমরা ১৫০০ শ্রমিক দিব। তিনজন থেকে তারা একজন বাছাই করে নিবে।"
মালয়েশিয়ার যাওয়ার জন্য যারা নিবন্ধিতরা সৌদিতেও যাওয়ার সুযোগ পাবেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, "শুধু মালয়েশিয়া নয়, ইতোমধ্যে নিবন্ধনকৃত বিদেশ যেতে ইচ্ছুক সব শ্রমিকদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে তারা সৌদি আরব যেতে পারবেন।"
সৌদি সফরের বৈঠকের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন,"কর্মী গমন প্রক্রিয়ায় নূন্যতম অভিবাসন ব্যয় এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতে দুইপক্ষ গুরুত্বারোপ করেছে। ভিসা ট্রেডিং এ জড়িত হলে যে কেউ সৌদি আইন অনুযায়ী ১৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে বলে সভায় অবহিত করা হয়েছে।"
বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার ওপর গত সাত বছর ধরে চলে আসা নিষেধাজ্ঞা 'শিগগিরই'তুলে নেওয়া হবে বলে সম্প্রতি জানায় সৌদি আরব সরকার।
রিয়াদে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে আলোচনা করেন সৌদি মন্ত্রী।
ওই বৈঠকের পর দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির কথা তুলে ধরে আবদেল ফকিহ বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সরকারি হিসাবে বর্তমানে ১২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত।
২০০৮ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক নিত সৌদি আরব।