Hajj Summary

 হজ্জে করণীয় কাজসমূহ


➤ প্রথম দিনের করণীয় কাজঃ  (৮ই যিলহাজ্জ)

১. যিনি মক্কা মুকাররামাহ ও তার আশেপাশের স্থান থেকে আগমন করবেন তিনি নিজ অবস্থান থেকে হজ্জের জন্যে ইহরাম বাঁধবেন, গোসল করে সুগন্ধী ব্যবহার করবেন এবং ইহরামের পোশাক পরিধান করবেন এরপর হজ্জের নিয়তে এ তালবিয়া পাঠ করবেনঃ লাইব্বাইকা হাজ্জান, লাইব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি' মাতা লাকা ওয়াল মুলক লা শারিকা লাক (আমি হজ্জের জন্যে হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির-আমি হাজির, আপনার কোন শরীক নেই, আমি হাজির, নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা ও নিয়ামত আপনারই, আর সকল বাদশাহী আপনার, আপনার কোন শরীক নেই)।

(তবে যিনি ব্যক্তি মীকাতের বাইরে থেকে এ তারিখে মক্কায় আসবেন, তিনি ইহরাম ছাড়া মীকাত অতিক্রম করবেন না)

২. মিনা অভিমুখে রওয়ানা করবেন এবং মিনায় গমন করে যিলহাজ্জ মাসের নয় তারিখ ভোরে সূর্যোদয় পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন। মিনাতে আট তারিখ যোহর, আসর, মাগরীব ও ইশার নামায, এবং নয় তারিখ ফজরের নামায যথা সময়ে আদায় করবেন এবং চার রাকআত বিশিষ্ট নামায কসর করে আদায় করবেন।


বিশেষ দ্রষ্টব্য: সুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থাপনার দিক বিশেষভাবে লক্ষ্য রেখে সৌদি সরকার ৭ই যিলহাজ্জ সন্ধ্যা থেকে মিনা অভিমুখে রওয়ানা করবেন.


➤ দ্বিতীয় দিনের করণীয় কাজঃ  (৯ই যিলহাজ্জ)


১. সূর্যোদয়ের পরে আরাফাতের ময়দানের অভিমুখে রওয়ানা করবেন। আরাফাতের ময়দানে যোহরের সময় যোহর ও আসর নামায একত্রে কসর করে আদায় করবেন এবং মধ্যাহ্নের পূর্বে (পৌঁছা) সম্ভবপর হলে মসজিদে নামিরায় যাবেন।

২. নামাযের পর হাত উঠিয়ে কিবলা মুখী হয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া ও যিকির করবেন।

৩. সূর্যাস্তের পর মুযদালিফা অভিমুখে রওয়ানা করবেন, ওখানে পৌঁছার পর ইশার সময় মাগরীব ও ইশার নামায আদায় করবেন। কিন্তু ইশা কসর করে দু' রাকআত নামায আদায় করবেন এবং মুযদালিফায় ফজর পর্যন্ত রাত্রিযাপন করবেন।

৪. ফজরের ওয়াক্ত হলে ফজরের নামায আদায় করবেন, অতঃপর আলো উদ্ভাসিত হওয়া পর্যন্ত দোয়া ও যিকির করবেন।

৫. সূর্যোদয়ের পূর্বে মিনা অভিমুখে রওয়ানা হবেন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: সুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থাপনার দিক বিশেষভাবে লক্ষ্য রেখে সৌদি সরকার ৮ই যিলহাজ্জ সন্ধ্যা থেকে আরাফাতের ময়দানের অভিমুখে রওয়ানা করবেন। 


➤ তৃতীয় দিনের করণীয় কাজঃ  (১০ই যিলহাজ্জ ঈদের দিন)


১. যখন মিনায় পৌঁছাবেন, জামারা আকাবায় যাবেন এবং তাতে পর্যায়ক্রমে সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করবেন, একটির পর অন্যটি এবং প্রত্যেক কঙ্কর নিক্ষেপের সময় তাকবীর বলবেন।

২. যদি সাথে হাদী (কোরবানীর পশু) সাথে থাকে তাহলে তা যবাই করবেন।

৩. মাথা মুণ্ডন করবেন অথবা চুল খাটো করবেন এবং এর মাধ্যমে প্রাথমিক হালাল হবেন। অর্থাৎ ইহরামের কাপড় খুলে তাঁর সাধারণ পোশাক পরিধান করবেন এবং সুগন্ধী ব্যবহার করবেন। আর তাঁর জন্য স্ত্রী সহবাস ব্যতিত ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ সমস্ত কাজ হালাল হয়ে যাবে।

৪. মক্কায় গিয়ে কা' বা শরীফে "তাওয়াফে ইফাদ্বাহ" করবেন। আর এটাই হচ্ছে হজ্জের (ফরয) তাওয়াফ। অতঃপর তামাতু হজ্জকারী সাফা মারওয়াহতে হজ্জের সা' য়ী করবেন। অনুরূপ, যদি তামাত্তু হজ্জকারী না হয়ে থাকেন কিন্তু তাওয়াফুল কুদুমের পর সা' য়ী করেন নি, তাহলে এখন সা' য়ী করবেন। আর এভাবে দ্বিতীয়বার হালাল হবেন এবং স্ত্রী সহবাস সহ ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ সমস্ত কাজ হালাল হয়ে যাবে।

৫. মিনায় ফিরে আসবেন এবং সেখানে (যিলহাজ্জ মাসের) একাদশ রাত যাপন করবেন।


➤ চতুর্থ দিনের করণীয় কাজঃ  (১১ই যিলহাজ্জ)


১. তিনটি জামারায় গিয়ে কংকর নিক্ষেপ করবেন। শুরুতে প্রথম জামারাতে, তারপর মধ্যবর্তী তারপর জামারা আকাবাতে (বড়টি)। প্রত্যেকটিতে সাতটি করে একটির পর আরেকটি কংকর নিক্ষেপ করবেন। প্রত্যেক কঙ্কর নিক্ষেপের সময় তাকবীর বলবে। এদিনের কংকর নিক্ষেপ করতে হবে মধ্যাহ্নের পর। মধ্যাহ্নের পূর্বে নিক্ষেপ জায়েয নয়, এবং প্রথম জামারায় ও মধ্যবর্তী জামারায় কংকর নিক্ষেপের পর দোয়া করার বিষয়টি বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখবেন।

২. এগার তারিখ দিনগত অর্থাৎ (দ্বাদশ) রাত্রটি মিনায় যাপন করবেন।


➤ পঞ্চম দিনের করণীয় কাজঃ (১২ই যিলহাজ্জ)


১. চতুর্থ দিনের নিয়মে তিন জামারাতে কংকর নিক্ষেপ করবেন।

২. এই তারিখে (আগে আগে) মিনা ত্যাগ করতে চাইলে সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা থেকে চলে আসবেন, আর দেরী করে আসতে চাইলে সেখানে রাত্রিযাপন করবেন।


➤ ষষ্ট দিনের করণীয় কাজঃ  (১৩ই যিলহাজ্জ)


বিশেষভাবে মিনা ছাড়তে যাঁরা বিলম্ব করেছেন এই দিনটি তাঁদের জন্যে।

এই দিনেঃ

১. তিন জামারাতে কংকর নিক্ষেপ করবেন যেভাবে পূর্বের দু' দিন করেছেন।

২. এরপর মিনা ছেড়ে চলে যাবেন।


হজ্জের সর্বশেষ করণীয় কাজ হচ্ছে বিদায়ী তাওয়াফ করা। আর আল্লাহই সবচেয়ে অধিক জ্ঞাত।


____________________________

দাওয়াহ, ইরশাদ, ওয়াকফ ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় । গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক উপ- মন্ত্রণালয় । 

সৌদি আরব ।

সংকলন: মুহাম্মাদ সালেহ আল উসাইমিন (রাহ.)

অনুবাদ: কিং আব্দুল্লাহ অনুবাদ ও আরবিকরণ ইনস্টিটিউট।

প্রকাশনা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংস্থা (পাব্লিকেশন ও সায়েন্টিফিক)

____________________________