বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে শ্রমিক নেয়ার ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় পাস হওয়ার পর রোববার দেশটির রয়েল কোর্ট তা অনুমোদন দিয়েছেন।
রোববার সকালে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ডেপুটি মিনিস্টার ডক্টর আহমেদ আল ফাহাইদ সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলামকে টেলিফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গত ১৮ থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সৌদি আরব সফর করেন। ওই সফরেই সৌদির শ্রমবাজার খোলার ইঙ্গিত মিলেছিল।
ঢাকায় ফিরে গত ২৫ জানুয়ারি সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এ ছাড়া সৌদি আরবের শ্রমমন্ত্রী আবদেল ফকিহকে উদ্ধৃত করে 'আরব নিউজ'ও একই খবর প্রকাশ করে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব। ১৯৭৬ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ২৫ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৩ জন বাংলাদেশি সৌদি আরবে গেছেন। কিন্তু ২০০৮ সাল থেকেই নতুন করে ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। ফলে ২০০৭ সালে যেখানে দুই লাখ চার হাজার ১১২ জন এবং ২০০৮ সালে এক লাখ ৩২ হাজার কর্মী সৌদি আরবে যায়। সেখানে ২০০৯ সালে মাত্র ১৪ হাজার ৬৬৬ জন কর্মী যায় দেশটিতে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত একই পরিস্থিতি অব্যাহত ছিল।
এদিকে, সৌদি আরবে কর্মী যাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রভাব পড়ে পুরো শ্রমবাজারে। জনশক্তি রপ্তানি অর্ধেকে নেমে আসে। কাতার, ওমান, বাহরাইনের মতো দেশে কর্মী যাওয়ার চাপ বেড়ে যায়। অনেকেই ছয় থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করে এসব দেশে যেতে থাকেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সৌদি আরব সফর করেন। তিনি সৌদি বাদশাকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার অনুরোধ জানান। এরপর প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন পাঁচবার সৌদি আরব সফর করেন। ২০১২ ও ২০১৩ সালে তিনি সৌদি শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী জানিয়েছেন, এবারের সফরে তাঁর সঙ্গে সৌদি শ্রমমন্ত্রীর দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় অভিবাসন খরচ কমিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। এ ছাড়া ভিসা, মেডিকেল ফি, কর্মীর এয়ার টিকিট সবই দেবে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ।