আজ বৃহস্পতিবার গনমাধ্যমে পাঠানো প্রবাসী সাংবাদিক ও কলামিস্ট মাঈনুল ইসলাম নাসিমের একটি অনুসন্ধানী একটি প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে সৌদি আরব এবং মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত শ্রমিকদের ভয়ানক দুর্দশা ও লাঞ্ছনার কথা ! somoyerkonthosor
মাঈনুল ইসলাম নাসিম :
দুবাইয়ের অলিতে গলিতে যখন আফ্রিকান জানোয়ারদের যৌন ক্ষুধা মিটিয়ে চলেছে বাংলাদেশের নারীরা, স্বদেশী মা-বোনদের কান্নায় যখন প্রতিনিয়ত আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে লেবাননে, তখন তার কোন কুলকিনারা না করে উল্টো সৌদি আরবে 'হাউজ মেইড' পাঠাবার নামে সেই বাংলাদেশের নিরীহ নারীদের ইজ্জ্বত বিক্রি করতে উঠে পড়ে লেগেছে আজ বাংলাদেশ সরকার। জঘন্য সব বিকৃত যৌন রুচীর অশিক্ষিত-বর্বর এক শ্রেনীর সৌদি পুরুষদের ২৪ ঘন্টা সেক্স ভায়োলেন্সের মুখে বাংলার অজ পাড়া গাঁয়ের অবলা নারীরা নিজেদের কিভাবে কতটা সামাল দেবেন, তাই নিয়ে তোলপাড় চলছে এখন সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝেও।
অব্যাহত ও ক্রমবর্ধমান যৌন নির্যাতনের যাবতীয় রেকর্ড আমলে নিয়ে ফিলিপাইন ইন্দোনেশিয়া এবং শ্রীলংকা সরকার যেখানে সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে একজন 'ধার্মিক নারী' হওয়া সত্বেও মা-বোনদের ইজ্জ্বত রক্ষায় কেন নড়েচড়ে বসছেন না, এই প্রশ্ন এখন গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে। অন্যান্য দেশ 'হাউজ মেইড' পাঠানো স্থগিত রাখায় সৌদি আরব তার দেশের নাগরিকদের চাহিদা পূরণে সম্প্রতি বেছে নেয় বাংলাদেশকে। অথচ অধিকাংশ সৌদিরাই গৃহকর্মীদের 'ট্রিট' করেন দাস-দাসী হিসেবে এবং তাদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকে 'নিজস্ব শরীয়ত' মোতাবেক 'হালাল' মনে করে থাকেন।
রাজতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে সৌদি সরকার যখন বরাবরের ন্যায় এবারও সচেতন তার দেশের নাগরিকদের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে, তখন দেশটিতে 'হাউজ মেইড' মোড়কে যৌনদাসী সাপ্লাইয়ের টেন্ডার বুঝে নিয়ে আনন্দে বোগল বাজাচ্ছেন প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীও যেন এক প্রকার জেগে ঘুমোচ্ছেন নেক্কারজনক এই ইস্যুতে। খন্দকার মোশাররফ প্রধানমন্ত্রীর নিকটাত্মীয় হওয়ার সুবাদে সকল প্রকার জবাবদিহিতার উর্ধ্বে থাকায় সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহমুদ আলীর সুযোগ নেই কোন রোল প্লে করার – সেগুনবাগিচার বিশ্বস্ত সূত্র এই প্রতিবেদককে এমনটাই জানিয়েছে।
সৌদিতে নারী গৃহকর্মী প্রেরণকে সরকারের 'দায়িত্বহীনতা' এবং 'ভয়াবহ ট্র্যাজেডি' আখ্যা দিয়ে সাবেক একজন রাষ্ট্রদূত এই প্রতিবেদককে বলেন, "পৃথিবীর নানা প্রান্তে কয়েক ডজন বাংলাদেশ দূতাবাসে যে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের দুর্নীতি হয় প্রতি বছর, প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের সময় সফরসঙ্গীদের বেহুদা বিশাল বহরের পেছনে রাষ্ট্রের যে কোটি কোটি টাকা জলে যায়, তা দিয়ে কিন্তু খুব সহজে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই কর্মসংস্থান করা যেতো ২ লাখ নারীর"। একসময়ের প্রভাবশালী ঐ কূটনীতিক সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আহবান জানিয়ে আরো বলেন, "একাত্তরে মা-বোনদের ইজ্জ্বত হরণকারী রাজাকারদের বিচার করবেন অথচ আজ সেই নারীদেরই ৮শ' রিয়ালে যৌনদাসী বানাবেন বিদেশে – কেন এই দ্বিমুখী নীতি"?
এদিকে সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে বছরের পর বছর বাসা-বাড়িতে ড্রাইভার ও হাউজ মেইডের কাজ করেছেন এমন বেশ ক'জন বাংলাদেশী নারী-পুরুষের সাথেও চলতি সপ্তাহে নতুন করে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। সঙ্গত কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন ভয়ংকর কিছু সত্য, অনিচ্ছা সত্ত্বেও যা প্রকাশ করতে হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের টনক নড়বে এই আশায়। প্রথমতঃ সৌদি বিবাহিত নারীরা তাদের নিজেদের মেয়ে সন্তানকেই নিরপদ মনে করেন না ঘরের স্বামী-ভাই-দেবর বা অন্য পুরুষের কাছ থেকে। অন্যদিকে অধিকাংশ সৌদিরা এতোটাই বিকৃত রুচীর যে, অতীতে ফিলিপাইন ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলংকান নারী গৃহকর্মীদের অধিকাংশদেরই তারা বাধ্য করেছেন বিকৃত সব সেক্সে।
যৌন নির্যাতন বলতে মূলতঃ জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে বোঝালেও বাসা-বাড়িতে বাবার হোটেলে দিনাতিপাত করা বেশির ভাগ সৌদিরা তাদের হাউজ মেইড তথা ভিনদেশী দাসীদের বাধ্য করেন সরাসরি পায়ুপথের সঙ্গমে তথা অ্যানাল সেক্সে। শুধু তাই নয়, সর্বোচ্চ রেটিং সম্পন্ন পর্নোগ্রাফিতে যা যা থাকে, ঠিক হুবুহ তা করানো হয় নারী গৃহকর্মীদের দিয়ে। সুরক্ষিত নিজগৃহে অন্ধকার জগতে তাদের লাল-নীল বাতি জ্বলে আরো বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে। অপেক্ষাকৃত কম বয়সী সৌদিরা তাদের বন্ধু-বান্ধবদের বিনোদন নিশ্চিত করতে বিদেশী গৃহকর্মীদের বাধ্য করেন গ্রুপ সেক্সের মতো কঠিন কাজেও। মারধর এড়াতে দিনের পর দিন বিকৃত ও অনিয়ন্ত্রিত যৌনাচারে ভয়ংকর সব রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন উক্ত নারী গৃহকর্মীরা।
জীবিকার তাগিদে ইচ্ছের বিরুদ্ধে এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়া বাংলাদেশীরা জানান, "বাসা-বাড়িতে বিদেশী হাউজ মেইড যারা রাখেন তাদের শতকরা নব্বই ভাগই ঐ ক্যাটাগরির"। অনুসন্ধানে জানা যায়, ইতর প্রকৃতির এক শ্রেনীর সৌদিরা আবার উচ্চ মোহরানার বিনিময়ে সৌদি নারীকে বিয়ে করতে রাজি নন এবং সহজলভ্য হাউজ মেইডদের নিয়োগ দিয়ে জৈবিক চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। সব মিলিয়ে এমনই এক ভয়াবহ পরিবেশ ও বিভীষিকাময় অবস্থাতেই নারী গৃহকর্মী প্রেরণের নামে যৌনদাসী পাঠাবার টেন্ডার স্বাক্ষর হলো ঢাকার প্রবাসী কল্যান ভবনে। সৌদি পাষন্ডদের দ্বারা ক্ষত-বিক্ষত একজন বাংলাদেশী নারীর ক্ষোভ, "মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কি কন্যা সন্তান নেই ? মন্ত্রী সাহেবদের কি স্ত্রী-কন্যা নেই ঘরে ? যদি না থাকে তবে প্রতিবাদের আগুণে জ্বালিয়ে দেয়া হোক ইস্কটানের প্রবাসী কল্যান ভবন"।